এই শীতে ত্বকের লাবন্য ধরে রাখতে মেনে চলুন এই টিপস গুলো

শীত আসতে না আসতেই আমাদের ত্বক নিয়ে ঝামেলার অন্ত নেই। স্কীন মরে যাওয়া থেকে শুরু করে ড্রাই হয়ে যাওয়া তো আছেই। যে কারনে এই সময় ত্বকের জেল্লা কিছুটা কমতে শুরু করে। তাই এই সময় বছরের অনান্য সময়ের চেয়ে একটু বাড়তি কেয়ার নিতেই হয়।

কেও কেও আছেন ভাবেন শুধু সকাল বিকাল ময়েশ্চারাইজার লাগালেই বুঝি সব কাজ শেষ। তাহলে ভুল করবেন, কিছু নিয়ম আছে সেগুলো মান্তেই হয়, তাহলে ত্বকের লাবন্য বজায় থাকবে।
আমাদের সবার ই স্কিন নিয়ে একটু বেশি ঝামেলায় পরতে হয় এই সময়, খুব ড্রাই হয়ে যায়, আবার ভীষন ফ্যাকাসেও হয়ে যায়। তাই এই সময় একটু বাড়তি যত্ন করতে হয় অন্যান্য সময়ের চেয়ে ।

ঠিক ভাবে যত্ন করতে পারলে তীব্র শীতেও ত্বক থাকবে স্মুথ আর লাবন্যময়।
অনেকেই আমরা জানিনা ঠিক কিভাবে কি কি করবো, সে কারনে একটু বাড়তি যত্নের অভাবে স্কিন যেমন খসখসে হয়ে যায়, তেমনি মলিন ও হয়ে যায়।
কয়েকটি নিয়ম মেনে চললে েই সমস্যাগুলো থেকে রেহায় পাওয়া তো যায় ই উল্ট জেল্লা বাড়াতে সাহায্য করবে।

যে যে নিয়ম গুলো মেনে চলতে হবে তাই লিখছি আজ।

১)কুসুম গরম পানির ব্যাবহার

শীতের এই সময় গরম পানি ব্যাবহারের বিকল্প থাকেনা। তাই ঝটপট গোসলে বা হাত পা ধুতে , এমনকি মুখ ধুতেও আমরা গরম পানি ব্যাবহার করে থাকি, যা খুব ই ক্ষতিকর।
গরম পানি ব্যাবহার করবেন , কিন্তু তা যেন একেবারে ঈষদুষ্ণ হয়। মাত্রাতিরিক্ত গরম পানি ত্বকের স্বাভাবিক ময়েশ্চার নষ্ট করে ফেলে, সে সাথে এক্সেসসিভ ড্রাইনেস, চুল্কানি বা উইন্টার একজিমারর খপ্পরে ও পরতে হয়।

তাই এই সময় কুসুম গরম পানি বা ঈষদুষ্ণ গরম পানিতে গোসল সেরেই সাথে সাথে হাতে পায়ে ময়েশ্চার লাগাতে হবে, সাথে সাথে মুখেও।

২)যেসব জিনিস দেখে এই সময় কস্মেটিক্স কিনবেন

যেসব কস্মেটিক্স এ এলকোহল আছে সেগুলো এই সময় এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। এলকোহলের কারনে ত্বকের আর্দ্রতা কমে যাবার সম্ভাবনা বাড়ে,

রেগুলার ক্লিন্সার ব্যাবহার করলে, এমন ক্লিন্সার বেঁছে নিবেন যাতে ময়শ্চারাইজার রয়েছে, তাতে করে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমবে।

ব্রনের সমস্যা থাকলে ceramides, hyaluronic acid এবং গ্লিসারিন রয়েছে, এমন কস্মেটিক্স বেছে নিন। এতে লাভ কি হবে? এই উপদানগুলি নানা ভাবে ত্বকের জন্য ভালো, বিশেষ করে ত্বকের আর্দ্রতা যাতে কোনওভাবে কমে না যায়, সেদিকে তো খেয়াল রাখেই, সেই সঙ্গে ব্রণ সহ নানা ত্বকের রোগকে দূরে রাখতেও সাহায্য করে।

ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা রাখে ল্যাক্টিক এসিড।
মুখে ব্যবহারের জন্যে যেকোনো ক্রিম কেনার আগে পেছনে ইনগ্রিডিয়েন্স পড়ে নিশ্চিত হোন আপনার ক্রিমে ল্যাকটিক অ্যাসিড উপাদানটি রয়েছে কিনা।

৩. সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে ভুলবেন নাঃ

যারা রেগুলার বাইরে যান, তারা সানস্ক্রিন লাগাবেন অবশ্যই অবশ্যই, এই সময় সুর্যের তাপ একটু বেশি থাকে দিনের বেলায়। সুর্যের তেজি ভাব ভাব থাকুক বা কোমল ভাব, মাস্ট সানস্ক্রিন দিবেন। কেননা, মনে হতে পারে ঠান্ডার মধ্যে সানস্ক্রিন লাগবেনা, এই ধারণা বাদ দিতে হবে, সুর্যের অতি বেগুনি রশ্মির প্রভাবে ত্বকের বেহাল অবস্থা হতে বেশি সময় লাগবেনা।

৪)প্রচুর পানি পান করুনঃ

শীতকালে প্রচুর পানি পান করতে ভুল যেন না হয়, এই সময় ত্বকের ন্যাচারাল মিনারেলস কমে যায়, তাই অনেক বেশি পানি পান করতে হবে, অনেকেই ঠাণ্ডার কারনে পানি কম খান বা আলসেমি করেও পানি পানে অনীহা করেন এই সময়, যা একেবারেই ভুল। ত্বকের ময়েশ্চার এই সময় ঠিক রাখতে প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে হবে।

আপনার ত্বক ভিতএ থেকে আর্দ্র না হলে সেতার প্রভাব কিন্তু ঠিক ই পরবে আপনার ত্বকের উপরেও। সুগার লেভেল ঠিক থাকলে ডাবের পানি বা ফলের জ্যুস অ খেতে পারেন, অনেকেই এই সময় জ্যুস বা ডাবের পানি তেমন খান না, এটি করবেন না প্লিজ।

৫)খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুনঃ

খাদ্যাভ্যাসে এই সময় কিছুটা সতর্ক থাকুন, অমেগা থ্রী ফ্যাট বা চর্বি রাখুন এই সময়ের খাদ্য তালিকায়। দেখবেন আপনার হাতের উপরিভাগ যদি নরম আর মসৃণ না হয়, তবে বুঝবেন আপনার অমেগা থ্রী ফ্যাট বা চর্বির ঘাটতি রয়েছে। তাই এই সময় স্যালমন ফিশ, অয়ালনাট ও অলিভ অয়েল খাদ্য তালিকায় রাখুন।
প্রচুর পানি রয়েছে এমন সবজি আর ফল খাবেন।

৬) অর্গানিক সাবান ও তেল এর ব্যাবহারঃ

ত্বকে ক্যামিকেল জাতীয় প্রোডাক্ট ব্যাবহার পরিহার করুন। যেকোনো এন্টিব্যাক্টিরিয়াল সাবান ও কস্মেটিক্স এ রয়েছে অ্যালকোহল ও ফ্র্যাগ্রেন্স, যা আপনার ত্বকের স্বাভাবিক তেলকে নষ্ট করে। অরগানিক সাবান ও তেল ব্যবহার করুন।

৭) নারিকেল তেল ব্যাবহারঃ

এক্সট্রা ভার্জিন নারিকেল তেল ত্বকের যত্নে অত্যন্ত কার্যকরী ভুমিকা পালন করে থাকে।
এই তেলের উচ্চমাত্রার ফ্যারুলিক ও পি-কুমারিক অ্যাসিডের কারণে খুব সহজেই ত্বকের ভিত্তিগত ক্ষতির সঙ্গে লড়াই করে এবং এর প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যগুলো আপনার ত্বককে সতেজ রাখবে।

তা ছাড়া শীতকালে সাধারণত মুখ ও শরীরের ত্বকের পাশাপাশি গোড়ালি, হাঁটু এবং কনুইয়ের অংশগুলোও রুক্ষ ও কালো হয়ে যায়৷

গোড়ালি, হাঁটু এবং কনুইয়ের রুক্ষতা ও কালো দাগ দূর করতে প্রথমে কিছুক্ষণ পানি দিয়ে জায়গাটি ভিজিয়ে রাখুন। তারপর নারিকেল তেলের প্রলেপ দিন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে নিজেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন।

আরো কিছু টিপসঃ

  • কুসুম গরম পানি দিয়ে সারাদিন মুখ হাত ধুলেও রোজ অন্তত দুবার ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুবেন।
    ঘুম থেকে উঠে আর রাতে ঘুমোতে যাবার আগে অবশ্যই।
  • মুখ ধোয়ার পর টোনিং করতে ভুলবেন না, টোনার দিয়ে মুখ মুছে তার কিছুক্ষন পর ময়েশ্চারাইজার ব্যাবহার করবেন।
  • ডায়েটের দিকেও বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।
  • মৌসুমের ফল আর সবজি যেমন খেতে হবে, সেই সাথে স্যুপ, সালাদ, ফলের রস আর দুধ খেলেও বেশ উপকার হবে।
  • মনে রাখবেন যেসব ফলের পানির মাত্রা বেশি সেগুলো খাদ্য তালিকায় রাখবেন বেশি। এতে শরীরে পানির ঘাটতি দূর হবে। সঙ্গে পুষ্টিকর উপাদানের চাহিদাও মিটবে। ফলে ত্বকের সৌন্দর্য তো বাড়বেই সেই সাথে মন অ প্রফুল্ল থাকবে।





Leave a Comment

Item added to cart.
0 items - ৳ 0.00