শাড়ির যত্ন

শিফন থেকে সুতি সবধরনের শাড়ি ভালো রাখার টিপস

আমরা বাঙালি রা যত পোশাক ই পরিনা কেনো, আমাদের স্পব অনুষ্ঠান পার্বন বা মিটিং এর জন্য ও আমরা শাড়ি ছাড়া যেন ভাবতেই পারিনা, প্রথম দেখা, বা গেট টুগেদার অথবা শেষ দেখা তেও কি সাজে সাজবো চিন্তা করতে না করতেই শাড়ি ই আগে মাথায় আসে।
বাঙালি নারী আর শাড়ি এ যেন একে অপরের জন্যই। বারো হাত একখানা শাড়ির সৌন্দর্য্যের কাছে যেন হার মানে অন্যসব পোশাকই।

শাড়ি আমরা মোটামুটি সবাই ভালোবাসি, তাই এই ভালোবাসার শাড়ি কিভাবে যত্নে রাখলে ভালো থাকবে তার টিপস নিয়ে আজকে লিখবো।

সুতিঃ
এমনিতে সাধারণ লন্ড্রি বা বাড়িতেই কাচতে পারেন, কিন্তু শাড়িতে জরির কাজ থাকলে ড্রাই ওয়াশ করাই ভালো। সুতির শাড়িতে স্টার্চ বা মাড় দিতে হয় ঠিকই, তবে বার বার মাড় দেওয়ার কারণে সুতি শাড়ি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।

শিফন শাড়ি
সবথেকে নাজুক শাড়ি। রোলার আয়রন ব্যবহার করবেন না, এতে শিফনের স্বাভাবিক ভাঁজ নষ্ট হয়ে যায়। সেফটিপিনও ব্যবহার না করাই ভাল। ভারী এমব্রয়ডারি করা শিফন হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখবেন না, নকশার ভারে শাড়ি ছিঁড়ে যেতে পারে।

জর্জেট ও শিফন শাড়ি ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন, চিপবেন না, ও শাড়ি রোল করে রাখুন, এবং অবশ্যই এই শাড়িগুলোতে নিমপাতা বা কালো জিরা দিয়ে রাখুন।

বেনারসি আর জামদানি
বাড়িতে নয়, একমাত্র বেনারসি শাড়ির কারিগরদের হাতেই ওয়াশ করাবেন বেনারসি আর জামদানি ।
নিজেরা অয়াশ করলে বা সাধারণ ড্রাই ক্লিনিং এ শাড়িতে ভাজ পরে যেতে পারে।
তাছাড়া এই শাড়ির কারিগর রাই সবচেয়ে নিখুত ভাবে কাটা পলিশ করতে পারবে।

কোরা, অর্গানজা ও চান্দেরি: মলমলের কাপড়ে জড়িয়ে, লম্বা কাঠের লাঠিতে শাড়ি পেঁচিয়ে রাখুন। কিছুদিন পর পর ভাঁজ খুলে, নতুন করে ভাঁজ করুন, যাতে ভাঁজে ভাঁজে শাড়ি ছিড়ে না যায়। ভুলেও হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখবেন না!

টিস্যু শাড়ি
শিফন ও জর্জেটের মতো এই জাতীয় শাড়িও খুব সহজে ছিঁড়ে যেতে পারে। তাই এক্সট্রা কেয়ার প্রয়োজন। মেশিনে এই শাড়ি কখনওই কাচবেন না। বেশিক্ষণ এই শাড়ি হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখবেন না। শাড়ি ভাঁজ করা থাকলে সেই ভাঁজ প্রায়শই পাল্টাতে হবে।

স্যাটিন শাড়ি
স্যাটিনের শাড়ি পানি সহ্য করতে পারেনা। এই জাতীয় শাড়িতে পানি দিলেই তা স্যাটিনের বুনট আলগা করে দেয়। তাই স্যাটিনের শাড়ি সব সময় ড্রাই ক্লিন করাবেন।

সিল্ক শাড়ি
সিল্কের শাড়ি সব সময় ড্রাই ক্লিন করাবেন। কারণ এই শাড়ির ফ্যাব্রিক খুব ডেলিকেট হয়। ড্রাই ক্লিন করার পর মসলিন কাপড়ে মুড়ে আলমারির এমন জায়গায় রাখবেন যেখানে আলো পৌঁছয় না।

যদি কোনও দাগ লেগে যায় এবং শাড়ি কাচতে হয় তাহলে ভুলেও ব্রাশ ব্যবহার করবেন না। ছোট্ট দাগ লাগলে পুরো শাড়ি কাচার দরকার নেই। যেখানে দাগ লেগেছে সেই জায়গাটা হাত দিয়ে ঘষে তুলে দেবেন।

প্রি-স্টিচড হাফ শাড়ি ও লেহেঙ্গা শাড়ি
বেশিক্ষণ হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখবেন না বা দলা পাকিয়ে রাখবেন না। তাহলে এই জাতীয় শাড়ি নষ্ট হয়ে যাবে। এই শাড়িরও ড্রাই ক্লিনিং প্রয়োজন কারণ মেশিনে কাচলে সুতো ছিঁড়ে যেতে পারে।

মনে রাখবেনঃ

* প্রথমবার শাড়ি যদি বাসায় ধুতেই হয়, তবে ধোবেন লবনের পানিতে। এতে রঙ বেশিদিন ভালো থাকে।
* ডিটারজেন্ট দেওয়ার আগে শাড়ি ঠাণ্ডা পানিতে দু’তিনবার ধোবেন।
* রাসায়নিকমুক্ত অরগ্যানিক ডিটারজেন্ট ব্যবহার করুন।
* ওয়াশিং মেশিনের চেয়ে শাড়ি হাতে কাচা ভালো।
* ইস্ত্রি করার সময় নিচে ও উপরে কাপড় রেখে নেবেন যাতে অসাবধানে শাড়ি পুড়ে না যায়।
* একটা প্যাকেটে অনেকগুলো শাড়ি না রেখে একেকটাতে একেকটা শাড়ি রাখুন।পোকার হাত থেকে শাড়ি বাঁচাতে আলমারিতে ন্যাপথ্যালিন ব্যাবহার করুন।
*ব্যবহূত শাড়ি ৩ মাস অন্তর ও অব্যবহূত শাড়ি ৬ মাস অন্তর বের করে ধুতে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top
3 Shares
Tweet
Share
Pin
Share