সারাদিনের সব কাজ কর্মের ধকল যায় হাত ও পায়ের উপর দিয়ে। তাই এদের যত্ন ও করতে হয় একটু বেশি -ই। কিন্তু সচরাচর দেখা যায় আমরা অনেকেই মুখের, চুলের যত্ন নিচ্ছি ঠিক-ই কিন্তু পাশ কাটিয়ে যাচ্ছি হাত পায়ের যত্নের বেলায়।
একজন মানুষের সৌন্দর্য মানে কিন্তু হাত পা সহ সম্পুর্ন শরীরের সৌন্দর্য মিলিয়েই পরিপুর্ন।
হাত আর পা এর যত্নে নিয়মিত মেনিকিউর -পেডিকিউর করতে পারলে রুক্ষতা, কালো হয়ে যাওয়া বা শুষ্কতা থেকে রক্ষা পাবে।
পার্লারে যাওয়া ছাড়াই ঘরে বসেই করতে পারেন এই মেনি-পেডি। এতে আপনার সময় ও বাঁচবে, টাকাও বাঁচবে।
আসুন জেনে নি–ই বাড়িতেই কিভাবে মেনিকিউর -পেডিকিউর করতে হয়।
পেডিকিউর মেনিকিউর এর জন্য যা যা লাগবেঃ
১) পেডিকিউর মেনিকিউর কীট, (যাতে থাকে নেইল কাটার, নেইল শেপার, ফাইলার, কিউটিকলস কাটার
২)এক্টি গামলা,
৩) কুসুম গরম পানি
৪) শ্যাম্পু,
৫) ঝামা পাথর (পিউমিস স্টোন)
৬) লেবু
৭) ফুট স্ক্রাব
৮) ময়েশ্চারাইজার
৯) টোনার
১০) কটন বল, নেইল পলিশ রিমুভার
১১) ভিটামিন ই অয়েল
১২) একটি ব্রাশ
যেভাবে মেনিকিউর করবেনঃ

১) মেনিকিউর করার একেবারে প্রথম কাজ হল হাতের নখ এ যদি নেইল পলিশ লাগানো থাকে, তা রিমুভার দিয়ে উঠিয়ে ফেলা।
কটন বল এ নেইল পলিশ রিমুভার দিয়ে আসতে আসতে নেইলপলিশ তুলে ফেলুন।
২) এবারে নখ গুলো সুন্দর করে কেটে নিন। নেইল কাটার দিয়ে সুন্দর শেপ অনুযায়ী কাটুন। কাটার পর নখ গুলো বাফার বা নেইল দিয়ে ঘষে নিন।
৩) এবার একটি গামলায় কুসুম গরম পানি নিয়ে তাতে লেবুর রস আর শ্যাম্পু মিশিয়ে সেই পানিতে হাত দুটো ডুবিয়ে রাখুন। কিছুক্ষন রাখার পর নখের কিউটিকলস নরম হয়ে যাবে, এবার কিউটিকলস কাটার দিয়ে কিউটিকলসগুলো ভালো করে কেটে ফেলুন।
৪) এবার নখের উপর ভিটামিন ই অয়েল লাগিয়ে রাখুন। ভালো ব্র্যান্ডের স্ক্রাবার বা লেবুর রস আর চিনির মিশ্রন নিয়ে আঙ্গুলের কালো কালো অংশে ভালো করে ম্যাসাজ করুন।
৫) ধীরে ধীরে পুরো হাতে স্ক্রাব দিয়ে ম্যাসাজ করুন। পরে কুসুম গরম পানিয়ে হাত দুটো ধুয়ে ফেলুন।

৬) সবার শেষে হাত ভালো করে টাওয়াল দিয়ে মুছে ভালো ব্র্যান্ডের হ্যান্ড ক্রিম বা লোশন লাগিয়ে নিন। প্রতিদিন অথবা সপ্তাহে অন্তত তিন দিন এভাবে আপনার হাতের যত্ন করলে ,হাত হবে কোমল, মসৃণ ও উজ্জ্বল।
পেডিকিউরঃ
১) মেনিকিউরের মত পেডিকিউরেও একই পদ্ধতিতে নেইল্পলিশ থাকলে তা উঠিয়ে ফেলুন, এবং একটি গামলায় কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস আর শ্যাম্পু মিশিয়ে পা দুটো ডুবিয়ে রাখুন কিছুক্ষন।
২) ৫-১০ মিনিট অপেক্ষা করার পর দেখবেন পায়ের নখ আর কিউটিকলস গুলো নরম হয়েছে, এবার নখ গুলো সাইজ মত সুন্দর করে কেটে কিউটিকলস গুলো ও কেটে ফেলুন।

৩) এবার আরো কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। তারপর একটি পা উঠিয়ে ব্রাশে শ্যাম্পু লাগিয়ে ভালো করে পায়ের নখ সহ পুরো পা ঘষে নিন।
৪)এভাবে আরেকটি পা ও ব্রাশ এ শ্যাম্পু লাগিয়ে ঘষে নিন।
৫) এইবার একটি ঝামা পাথর নিয়ে পায়ের নিচে ও গোড়ালি ঘষে নিন। এতে পা এর মড়া চামড়া উঠে যাবে। আবার পা ভিজিয়ে রাখুন।
৬) এবার পা এ ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। এবার নখের উপর অরেঞ্জ স্টিক দিয়ে নখের কিউটিকল নখের পেছনে ফিরিয়ে ঘষুন। নখের ভেতরের ময়লাও পরিষ্কার করে ফেলুন অরেঞ্জ স্টিক বা কিউটিকলস স্টিক দিয়ে।
৭) নখের চারপাশে কিউটিকলের আলাদা স্তর থাকলে টো-নেইল ট্রিমার দিয়ে তা কেটে ফেলুন সাবধানে।
৮) এবার পা এএকটি লেবুর টুকরা দিয়ে ৫ মিনিটের জন্য ভালো করে ঘষুন। ঘষা শেষ হলে পা ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৯) এবার হাঁটু পর্যন্ত স্ক্রাব লাগিয়ে ভালো করে ম্যাসাজ করুন, মাঝে মাঝে একটু পানি লাগিয়ে নিন, এতে ম্যাসাজ করতে সুবিধা হবে। ম্যাসাজ শেষ হলে পা ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
১০) টাওয়াল দিয়ে পা মুছে ময়েশ্চারাইজার লাগান।
১১) নেইল পলিশ লাগাতে চাইলে পায়ের বা হাতের নখে, আগে অবশ্যই ট্রান্সপারেন্ট বা স্বচ্ছ রঙের বেইজ কোট দিয়ে নেবেন।
এতে করে নখ হলুদ হবেনা।
ব্যাস হয়ে গেলো আপনার পেডিকিউর ।
এভাবে মাসে ২/১ বার পেডিকিউর করলে পা হবে, মসৃণ ও উজ্জ্বল।