জামার সাথে, বোরখার সাথে, পাঞ্জাবির সাথে তো বটেই যারা হিজাব করেন তারা শাড়ির সাথেও এখন দারুন ভাবে হিজাব পরছেন। পর্দা তো করা হচ্ছেই সাথে স্টাইলিশ দারুন লুক ও এনে দিচ্ছে এই হিজাব। মুসলিম নারীদের মধ্যে এই চল থাক্লেও এখন অনেক অমুসলিম র’ এই হিজাব নেয়া শুরু করেছেন। পশিমা দেশে এটি বেশ জনপ্রিয় এখন মুস্লিম মেয়েদের বিশেষ করে।
বাঙ্গালিদের মধ্যেও এখন প্রচুর চলছে এই স্টাইল।
নতুন অবস্থায় যারা হিজাব নেয়া শুরু করেছেন তাদের প্রথম অবস্থায় শাড়ির সাথে হিজাব পরতে বেশ অসুবিধায় পরতে হয়।
আজকে তাদের জন্যই লিখবো যারা শাড়ির সাথে কিভাবে হিজাব নেবেন বুঝতে পারছেন না।
স্কার্ফ বা ওড়না স্টাইলঃ
প্রথমে একটি স্কার্ফ বা ওড়না মাথার উপর নিয়ে স্কার্ফের এক সাইড বড় আরেক সাইড ছোট রেখে পিছনের দিকে টেনে নিয়ে মাথার পিছনে পিন দিয়ে ভালোভাবে আটকিয়ে নিয়ে ডান সাইডের কোনাটি সাম্নের দিকে নিয়ে আসুন, এখন এর কোনার অংশ ডান সাইড থেকে বাম সাইড এ নিয়ে আসুন। এই অংশটি বাম সাইডে কানের পাশে ভালোভাবে পিন দিয়ে আটকে দিন।
বাম সাইডে থাকা অংশটি স্কার্ফ বা ওরনার সাম্নের দিকে নিয়ে ডান সাইডে এনে ভাজ খুলে দিন। এবার স্কার্ফের ভাজ খোলার অংশটি মাথার পিছন থেকে হিজাবের মেইন অংশটি সামনে আনুন। স্কার্ফের বড় অংশটুকু উপরে তুলে খোপার উপরে তুলে কাভার করে নিন। প্রথমে কানের যে অংশে পিন লাগানো হয়েছিল সেই অংশে বড় সাইডের স্কার্ফের কোণা এনে বসাতে হবে। কানের উপরে বাকি অংশের স্কার্ফকে পিন দিয়ে সুন্দর করে সেট করে নিন। ব্যাস, হয়ে গেলো আপনার শাড়ির সাথে হিজাব পরার চমৎকার স্টাইল!
কন্ট্রাস্ট স্টাইল
প্রথমে একটি মেয়েদের চুল ঢাকার টুপি বা ইনার ক্যাপ (শাড়ির রঙের সাথে ম্যাচ করে) পরুন।এরপর গলায় ছোট (কনট্রাস্ট) স্কার্ফ বা ওড়না নিয়ে গলার পেছন দিয়ে বাঁধুন।
তারপর স্কার্ফটি মাথার ওপরে মাঝ বরাবর দিয়ে দিন, যাতে করে নিচের ক্যাপ এর অংশ দেখা যায়। স্কার্ফের এক সাইড বড় আরেক সাইড ছোট রাখুন। স্কার্ফের দুই সাইড গলার পেছনে নিয়ে বাঁধুন। স্কার্ফের ছোট অংশ সামনে নিয়ে আসুন এবং অন্য অংশ কাঁধে পিন দিয়ে আটকে নিন। স্কার্ফের বড় অংশ সামনে আনুন। এটি ভালোভাবে মাথার ওপর পেঁচিয়ে কানের উপরের অংশে পিন আপ করে নিন। আর এটাই হচ্ছে শাড়ির সাথে আপনার কন্ট্রাস্ট স্টাইলের হিজাব।
হিজাবের সাথে শাড়ির কেমন ব্লাউজ পরবেনঃ
হিজাব আপনি যেমন ই পরুন যে স্টাইল ই ফলো করুন না কেনো, শাড়ির সাথে আপনার ব্লাউজ হতে হবে অবশ্যই ফুল স্লিভ। কারিন হাফ স্লিভ ব্লাউজের সাথে হিজাব একেবারেই যায় না, খুব বেমানান লাগে।
আর হাতায় খুব কাজ করা না থাকলে ভালো, খোলা অংশ বা খুব কাজ করা স্লিভ হিজাবের সাথে তেমন যায় না।
ব্লাউজের গলা কেমন দিবেন হিজাবের সাথেঃ
শাড়ির সাথে হিজাব যখন পরবেন তার ব্লাউজ অবশ্যই ছোট দিবেন। এমন ভাবে হিজাব করবেন যেন ব্লাউজের গলা পর্যন্ত ঢেকে থাকে, বাকি অংশটা শাড়ি দিয়ে কাভার করে দিন।
ব্লাউজের পিঠ, গলা বা কাঁধে কোনো অংশে যেন খোলা ধরণের ডিজাইন না থাকে সে দিকেও খেয়াল রাখবেন। কারণ মনে রাখতে হবে, হিজাব শুধু ফ্যাশনই নয়, এটা শালীনতা ও গোপনীয়তা রক্ষা করার পোশাকও। তাই খোলামেলা পোশাকের সাথে হিজাব একদমই মানায় না ।
শাড়ির সাথে মানান সই রঙের হিজাবের রঙ আর ফেব্রিক্স বেঁছে নিনঃ
শারির সাথে একেব্রে একই ধরনের রঙের হিজাব পরতে হবে এমন কোনো ধরাবাধা নিয়ম নেই, আপনি যে রঙের ই যে কাপড়ের ই হিজাব পরুন না কেনো তা যেন শাড়ির সাথে মিলে যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।
দেখতে সুন্দর আর আকর্ষনীয় লাগার জন্য একটু মানান সই হিজাব মিলিয়ে নিলেই হয়, হোক সেটা কন্ট্রাস্ট বা সেম ধরনের।
হিজাবের সাথে এক্সেসরিজ পরে হয়ে যান আরো গর্জিয়াসঃ
কোনো জমকালো অনুষ্ঠানে যেতে হলে বা কোনো পার্টিতে গেলে একটু দামি কাপড়ের বা নকশা করা স্কার্ফ বেঁছে নিন। শাড়ির সাথে মিলিয়ে। এবার সুন্দর গর্জিয়াস নকশার বা স্টোনের ব্রোচ লাগিয়ে দিন। সেই সাথে ম্যাচিং করে পার্স বা ব্যাগ নিন সাথে পায়ের স্যান্ডেল ও। আরো একটু বেশি ভারি সাজ চাইলে মাথা স্কার্ফ এর নিচ দিয়ে একটা ছোট্ট টিক্লিও পরতে পারেন। ব্যাস দারুন ভাবে হয়ে গেলো যেকোনো পার্টিতে যাবার জন্য আকর্ষনীয় আর গর্জিয়াস লুক।
আজকের লেখাটি পরে নিশ্চয়ই জেনে নিলেন কত সুন্দর ভাবে শাড়ির সাথে ও চাইলেই হিজাবে পর্দা করে দারুন ভাবে স্টাইল করা যায়, শুধু স্টাইল ই নয়, ভালো ভাবে পর্দা করতে মানান্সই মার্জিত লুক পেতে এখুন ই ট্রাই করে দেখুন একবার।
হয়ে যান আরো গ্ল্যামারাস আর গর্জিয়াস ও।