আমাদের দেশের বা এই উপমহাদেশের প্রায় সবার ই জাতীয় পোশাক বা প্রিয় পোশাক হল শাড়ি। প্রায় সব বয়সের সবার ই শাড়ি পরতে ভালো লাগে। অফিস হোক বা ঘোরোয়া অনুষ্ঠান বা যেকোনো ট্র্যাডিশনার অনুষ্ঠান যেকোনো ইভেন্টে শাড়ি যেন পরতেই হবে।
এই কথা মাথায় রেখেই বাজারে পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের শাড়ি। জামদানি, বেনারসী, সিল্ক, তাঁত কিংবা জর্জেট। এইসব শাড়ি এখন খুব আউট ডেটেড।
তাই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই শাড়িগুলোর মধ্যে দেওয়া হয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া। সিল্কের শাড়ির উপর জুটের কাজ করে বানানো হয়েছে জুট সিল্ক। এমনকী, ট্র্যাডিশনাল শাড়ি বেনারসীর উপরেও প্রত্যেক বছরই কিছু না কিছু আধুনিকতার ছোঁয়া দেওয়া হচ্ছে। জর্জেট, পাটলি-পাল্লু, তাঁত বেনারসী আরও কত কী। জামদানির মোটিফেও দারুন ভিন্নতা আনা হচ্ছে।
তবে যাই ই বলিনা কেন অনেকেরই শাড়ির প্রতি একটা আলাদা ফ্যাসিনেশন আছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক শাড়ি নির্বাচন করতে পারেন না বলে তাঁদের দেখতে খারাপ লাগে।
কাউকে বেশি মোটা আবার কাউকে খুব স্লিম লাগে। অনেকেই মনে করেন মোটারা শাড়ি পরলে তাদের আরও মোটা লাগে। কিন্তু এই কথা সম্পূর্ণ ভুল। কারণ, মোটাদের উপযুক্ত অনেক রকম শাড়ি পাওয়া যায় শোরুম গুলোতে । তাই আজ আমি সামান্য চিন্তা মুক্ত করতে এলাম। আসুন দেখে নি ই ঠিক কী ধরনের শাড়ি, কীভাবে পরলে আপনি হয়ে উঠবেন অপরূপা।
.১)আমার হাত একটু মোটা শরিরের তুলনায়, তাই ফুল স্লিভ বা কোয়ার্টার পরি।
আপনাদের কারো হাত মোটা হলে অবশ্যই ফুল স্লিভ ব্লাউজ পরুন। তার সঙ্গে পিঠ যদি অনেকটা কাটাও থাকে তাহলেও কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু হাত মোটা হলে কখনওই শর্ট স্লিভ ব্লাউজ় পরা উচিত নয়। এতে আরো বেশি মোটা দেখা যায়।
২) আমার আগে ধারণা ছিল যদি শরীরের নীচের অংশ মোটা হয় তাহলে ভারী কোনও ফ্যাব্রিক যেমন তাঁত বা সিল্কের শাড়ি পরা উচিত নয়, এটা একেবারেই ভিন্ন ভিন্ন মত,
আপনি অনায়াসেই পরতে পারেন যেকোনো শাড়ি , এক কালার বা সেলফ মোটিফে করা নকশা, যেমন লাল জমিনে লাল সুতার কাজ, বা সবুজ জমিনে সবুজ সুতা এরকম শাড়িতেও খুব স্লিম দেখাবে। আর যদি নেহাত না ই পরতে চান তবে,
সেক্ষেত্রে শিফন অথবা জর্জেটের শাড়ি পরতে পারেন। এগুলো মেইন্টেইন করাও সহজ, গায়ের সাথে লেগে থাকে যার ফলে আপনাকে রোগা দেখতে লাগবে।
৩) যারা একটু মোটা বা স্বাস্থ্য ভালো, ভারি কাজের শাড়ি এভোয়েড করতে পারেন,
শাড়ি ভারী না হলেও, শাড়ির বর্ডারে যদি ভারী কাজ করা থাকে, তাহলেও মোটা লাগে দেখতে। তাই ভারী কাজ করা শাড়ি না পরে চিকন পাড়ের শাড়ি পরাই ভালো।
৪) কোমরে বা পেটে চেনও পরতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার পেটের চেনের দিকেই সকলের নজর থাকবে। আপনি মোটা কী স্লিম তা কারোর নজরে আসবে না।
৫) অনেকেই শাড়িতে পিন করতে চান না, শাড়িতে পিন করা খুব জরুরি কারো কারো ক্ষেত্রে, । সঠিকভাবে যদি পিন নাও করতে পারেন, তাহলে শুধুমাত্র শাড়ির পাড় কাঁধের ওপরে তুলে দিয়ে পিনআপ করে নিতে পারেন। এর ফলে আপনার পেটও দেখতে পাওয়া যাবে না।
৬) পেটিকোট খুব গুরুত্ত্বপুর্ন একটা অংশ, শুধু সুন্দর দেখতে শাড়ি পরলেই হবে না । তার সঙ্গে মানানসই পেটিকোট পরতে হবে। ফিশ কাটিং পেটিকোটও পরতে পারেন। এর ফলে আপনার শাড়ি পেটিকোটের সঙ্গে লেগে থাকবে। যার জন্য আপনাকে রোগা দেখতে লাগবে। আবার টাইটস বা টাইস ও পরতে পারেন শাড়ির সাথে।
৭) একটা আর্টিকেল এ পরেছিলাম মোটাদের হালকা রঙের শাড়ি পরলে আরও মোটা লাগে দেখতে। যদিও অনেক ক্ষেত্রে আমার ভালোই লাগে হাল্কা যেকোনো রঙের শাড়ি । কিন্তু একটু বেশি মোটা যারা, তাই হালকা শাড়ির বদলে কালো, লাল অথবা যে কোনও ডিপ কালারের শাড়ি পরতে পারেন।
৮ ) সবচেয়ে জরুরি যেটা সেটা হল, কুচি, ঠিক ভাবে সুন্দর উপায়ে কুচি করতে পারলে শাড়ি পরার অর্ধেক যুদ্ধে আপনি জয়ী ।
সঠিক ভাবে কুচি করুন, খুব বেশি না করে, আচল টা বড় রাখুন।
সবশেষে একটাই কথা… যে শাড়ি ই পরবেন যাই ই পরুন না কেনো, খুব কনফিডেন্টলি ক্যারি করবেন, আসলে মোটা বা স্লিম দেখানো খুব গুরুত্ত্বপুর্ন কোনো বিষয় ই না আমার কাছে, আপনি আরাম অনুভব করছেন কি না, আপনার ভালো লাগছে কি না, এটাই প্রধান।
নিজেকে ভালোবাসুন, নিজের জন্য বাচুন 🙂
