আর ক’টা দিন পরেই সনাতন ধর্মাবলম্বিদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজা। পুজার আনন্দে সবাই এখন থেকেই নিশ্চয় ই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।
কে কোথায় ঘুরতে যাবেন, কিভাবে সাজবেন, সব মিলিয়ে দারুন প্রস্তুতি নিতে এখনি গুছিয়ে ফেলুন সব।
ভক্তি আর আনন্দে কাটে পুজার কয়েকটা দিন। মন্দিরে মদিরে ঘুরে বেড়ানো ছাড়াও পুজার সাজসজ্জার দিকে মনোযোগ দিতে পোশাক নিয়ে আজ কিছু লিখবো।
যেহেতু মোটামুটি গরম ই থাকবে , তাই অবশ্যই আরামদায়ক পোশাক নির্বাচন করতে ভুল্বেন না।
পুজা চলে ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত ।পুজাউ একটু স্পেশাল লুক আনতে বা উৎসবের দিন গুলোতে নিজেকে একটু সুন্দর ভাবে উপস্থাপনের জন্য পোশাকের গুরত্ব অনেক বেশি।
ষষ্ঠী , সপ্তমী বা নবমীতে, জিন্সের প্যান্ট, ফতুয়া, কিনবা সালোয়ার কামিজ যাই পরুন না কেনো, দশমির দিন টা একেবারেই আলাদা, এদিন শাড়ি না পরলেই যেন নয়।
ষষ্ঠী থেকে দশমী যেদিন ই শাড়ি পরুন, থ্রী কোয়ার্টার হাতা , বা ঘটি হাতা, লম্বা হাতায় কুচি দিয়ে নানান ঢঙ্গে ব্লাউজের সাথে আপনার পছন্দের লাল পেড়ে সাদা শাড়ি বা লাল ব্লাউজে সাদা শাড়িতে, মাথায় গুজে দিন শিউলি কিংবা বেলি ফুলের মালা।
ইদানিং মেয়েদের ক্ষেত্রে ৪ দিনে চার পোশাক নয়, বরং চার দিনে চার ভিন্ন লুকের প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে।
এই চার দিনের আলাদা করে কিছু টিপস শেয়ার করি আপনাদের সাথে আজ।
ষষ্ঠীর সাজঃ পুজার প্রথম দিন, এদিন মা দুর্গাকে ঘরে তুল্বার দিন, বেছে নিন আরামদায়ক সুতির কোনো শাড়ি বা সালোয়ার কামিজ।
অনেক কাজের ভিতরে, পুজা অর্চনাটাই মেইন , তাই সকালে বা দুপুরের দিকে যারা বেরুবেন তারা আরামদায়ক তাঁত এর বা জামদানির সুতির শাড়ি পরতে পারেন, একবারে আরাম ও বজায় থাক্লো, ঐতিহ্য গত ভাব ও ফুটে থাক্লো । হাল্কা মেকআপ আর হাল্কা রঙের কোনো লিপ্সটিক পরতে পারেন।
সপ্তমীর সাজঃ দশমীর দিন ঘনিয়ে আসা মানেই গর্জিয়াস ভাব আনা ধীরে ধীরে নিজের সাজে সজ্জায়।
ষষ্ঠী আর সপ্তমীতে একই ধরনের মার্জিত আর আভিজাত্যিকভাবে সাজাতে পারেন, চাইলে একটু হাল্কা মেকাপ এর সাথে ভারিও করতে পারেন সাজ এ, এদিন চোখে আইলাইনার টেনে, কপালে টিপ দিলে আরেকটু ভালো লাগ্লো।
এদিন জামদানি বা তাতের শাড়ি না পরলেও কাতান বা জর্জেট ও পরতে পারেন।
অষ্টমির সাজঃ অষ্টমীর সকাল টা শুরু হয় অঞ্জলি অর্পনের মধ্য দিয়ে। পাড়ার মন্ডপে বা মন্দিরে গিয়ে এদিন দেবীকে ফুল দেয়া হয়। এদিন বাচ্চাদের খুশির বা আগ্রহের এক্তি বিশেষ দিন, তাই ওদের সাজ পোশাকেও একটু রঙিন ভাব রাখতে পারেন।
অষ্টমীর সন্ধ্যায়ঃ যেকোনো পোশাক সালোয়ার কামিজ বা শাড়ির সাথে মাথায় একটি খোপা করে গুজে দিতে পারেন সাদা ফুলের মালা।
কপালে একটি বড় ময়ুরকন্ঠি টিপ দিতে পারেন ।
কুমকুম বা সিঁদুর পরে সিঁথির প্রান্তে একটি ছোট টিপ জুরে দিন। চোখে কাজল টানুন। অষ্টমীর রাতে প্রায় সবাই ভারি সাজে সাজতে পছন্দ করেন, শাড়ি গয়না মেকআপ সব ক্ষেত্রেই সবাই চাই একটি গর্জিয়াস লুক, চুল টা একটু ভিন্ন ভাবে বাধলেন, সাথে কড়া লাল লিপ্সটিক ও দারুন লাগবে ।
একটা কড়া রঙের জামদানি বেছে নিতে পারেন। বা কাতান ও ভালো লাগবে। কিশোরিদের জন্য ও বা যারা শাড়ী পরতে চাইবেন না, কিন্তু আবার আভিজাত্যিক বা ঐতিহ্যগত ভাব চান, তারা জামদানির অনেক রকমের ভারি নকশার বা হাল্কা হাফ সিল্ক বা সুতির জামা গুলো বেছে নিতে পারেন।
শাড়ির পাড় বা আঁচলের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে ব্যাগ নিতে ভুল্বেন না। ব্যাগ এ একটি লিপ্সটিক, প্রেসড পাওডার রাখবেন। হা হা হা। আমি আসলে প্রচুর ঘামিতো, তাই এই দুট রাখি। এক দু ঘণ্টা পর মুখ ধুয়ে আবার দেই।
আর অবশ্যই ব্যাগ এ জায়গা থাকলে পানি রাখবেন।
নবমীর সাজঃ
নবমীতে প্রধান আকর্ষন সান্ধ্য পুজা, এদিন সন্ধ্যায় সবাই মন্দিরে যান। সন্ধ্যায় পুজা বলে সবাই একটু ভারি সাজে সাজেন। বেজ মেকআপ এর সাথে ব্লাশন, আই শ্যাডর সাথে েদিন, একটু দারুন ভাবে মেকআপ নিয়ে শাড়ি বা কামিজের সাথে মিলিয়ে অর্নামেন্ট নির্বাচন করবেন।
একটু ভিন্ন ধরনের সাজ, মেকআপ, বা গয়না , সাথে ফুলের মালা মাথায় আর যদি পোশাক হয় জামদানি তাহলে একবারেই অসাধারণ এক বৈচিত্রপুর্ন সাজে সবার থেকে আলাদা আর নজরকারা হয়ে থাকবেন।
দশমীর সাজঃ
শারদিয় পুজার অন্যতম আকর্ষন দশমী। দশমীর সাজ মানে লাল পেড়ে সাদা শাড়ি, বা হলুদ পেড়ে লাল শাড়ি, কিংবা একদম লাল শাড়ি।
প্রায় সব বয়সী নারীর ক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য।
অনেকে আবার প্রতিমার মত সাজতেও পছন্দ করেন। চোখে টানা কাজল আর আই লাইনার, ঠোঁটে লাল লিপ্সটিক, স্নিগ্ধ মেকআপ আর সিঁদুর ।
এদিন ঠাকুরকে সিঁদুর পরিয়ে দেবার পাশাপাশি নিজেরাও মেতে উঠেন সিঁদুর খেলায়।
**
ষষ্টি থেকে দশমী দিনের বেলাইয় যখন ই মেকআপ নিবেন প্রথমেই সানব্লক বা সানস্ক্রিন দিতে ভুল্বেন না।
** ডি হাইড্রেশন যাতে না হয় খেয়াল রাখবেন।
সাজের ক্ষেত্রে মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেরাও পিছিয়ে নেই, পুজোর প্রথম দিঙ্গুলোতে তারা হাল্কা রঙের পাঞ্জাবি আর পায়ে আরামদায়ক ফিতে স্যান্ডেল পরেন।
আর শেষ দিন গুলোতে কড়া রঙের বা জমকালো পাঞ্জাবি ফতুয়া বেছে নিতে পারেন। যারা একটু ভিন্ন ভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে চান তারা পাঞ্জাবির সাথে ধুতিও বেছে নিতে পারেন, চুলে জেল লাগাতে পারেন একটু ভিন্ন লুক আনতে। ভালো একটি ব্র্যান্ডেড ঘড়িও পরতে পারেন,

তবে যাই করুন যাতে দৃষ্টিকটু না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। আপনার ব্যাক্তিত্ত্বের সাথে যায় এমন সাজ এ সাজবেন অবশ্যই।
** মনে রাখবেন সাজ সজ্জা কখনও ব্যাক্তিকে বড় করেনা, বরং ব্যাক্তি ই সাজসজ্জাকে ছাপিয়ে অনন্য অসাধারণ হয়ে উঠতে পারে।