সবাই ই চায় নিজেকে আরো বেশি আকর্ষনীয় ভাবে গড়ে তুলতে, যে খুব সুন্দর জন্মগতভাবে, সেও চায়।
দিনে দিনে আরো বেশি সুন্দর আর আকর্ষনীয় হয়ে উঠাতে সবাই ই চাই। যদি কেও মুখেও বলে থাকে “কে কি ভালো যাই আসেনা” আসলে সেও চায় মনে মনে অন্যের কাছে নিজেকে আরো বেশি আকর্ষনিয় ব্যাক্তিত্বের করে গড়ে তুলতে।
আমরা ভালোবাসা চাই, সন্মান চাই, অন্যের কাছ থেকে পজিটিভ কমেন্ট শুনতে বা কেও মনে মনে আমাদের ভালোবাসুক সেটাও আমাদের কাম্য।
আমরা মানব জাতি খুব ভালোবাসা প্রিয় জাতি, নিজেকে সন্মান করুক, ভালোবাসুক, মেনে চলুক এটুকুতে আমাদের অনেক মন তৃপ্তি বা সুখ নির্ভর করে।
আমরা যখন দেখি যে কেও আমাদের কোনো কারনে ভালো ভাবে নিচ্ছেনা, বা কোনো একটা কারনে পছন্দ করছেনা অথবা রিজেক্ট করছে, আমাদের মনের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়, আমরা কেও কেও আছি সেটা সহ্য করতে পারিনা পারিনা।
এটা খুব ই অসম্ভব ব্যাপার প্রতিটা মানুষের কাছে ভালোবাসার বা পছন্দের মানুষ হওয়া, যদি সেটা কেও চেষ্টাও করে তাহলে সবাইকে খুশি করতে যেয়ে যে নাটক টা প্রতিনিয়ত করে যেতে হবে তাতে নিজের ব্যাক্তিত্ত্ব , নিজের ভালো লাগার সব বিসর্জন দিতে হবে। এভাবে একদিন বেচে থাকার যে চার্মিং টা জৌলুশ টা তা হারিয়ে যাবে।
শুধুমাত্র নিজের কাছেই নিজে প্রতিনিয়ত ভালো থাকুন, ভালোবাসুন নিজেকে, নিজের ভালো গুণ গুলোকে আগলে নিয়ে নিজেকে প্রতিনিয়ত ছন্দের সাথে এগিয়ে যান, নিজেকে সন্মান করুন, আপনি নিজেকে সৎ, সাহসী, বুদ্ধিমান, ম্যাচিয়ুর হিসেবে দিনের পর দিন নিজের ব্যাক্তিগত উন্নয়ন ঘটান, দেখবেন নিমিষেই সবাই এই আপনার ইউনিকনেস টাকেই যারা ভালোবেসে কাছে আসবে, পছন্দ করবে তাদের ই দরকার। সবাই এই অথেন্টিক থাকাকে পছন্দ করতে হবে এমন নয়।
আপনার নিজের ভ্যালুস, নীতি, ব্যাক্তিগত চাওয়া পাওয়া, ভালো লাগা, সততা আর এগিয়ে চলা… এই নিয়েই হোক আপনার চলা। এতেই দেখবেন আপনার এই আকর্ষনিয় ব্যাক্তিত্বে সবাই খুব প্রশংশা করবে, না করলেও বেশ সন্মানের চোখে দেখবে।
নিজের জন্যই দিনের পর দিন কিছু কিছু জিনিস আছে করে যান। দেখবেন সবাই আপনাকে ভালোবাস তে বাধ্য, সবার চোখে আরো বেশি আকর্ষনীয় হয়ে উঠুন …

.১)নিজস্ব একটা গতিধারা সৃষ্টি করুন
নিজের আগ্রহের বিষয় গুলো স্থির করে সে অনুযায়ী কাজ করুন। নিজের আগ্রহ, ভালো লাগার বিষয়, পছন্দ অপছন্দ , মুল্যবোধ সব কিছু স্থির করে নিন, এতে অন্যদের দেয়া পছন্দ আপনাকে দিয়ে চাপাতে পারবেনা। যা ভালো লাগবেনা জোর করে করবেন না।
২)অন্যের মতামত দ্বারা চালিত হবেন না
অনেকেই আছেন অন্যের মতামত দ্বারা চালিত হতে থাকেন, অন্যের কাছে ভালো সাজতে, অন্যের স্বীকৃতি লাভের লোভে এমন কিছু করবেন না যাতে ব্যাক্তিগত ক্ষতি হয়, মানসিক শান্তি নষ্ট হয়।
সেটাই গ্রহণ করুন যেটা আপনার কাছে মুল্যবান, যা আপনার জন্য গুরত্বপুর্ন।
৩)নিজের বিচার বুদ্ধির উপর আস্থা রাখুন এবং নতুন এক্সপেরিমেন্ট করতে ভয় পাবেন না
নিজেকে ভালোভাবে জানুন, এবং দেখুন কোন কোন বিষয় গুলো আপনি বেশ পছন্দ করেন এবং উপভোগ ও করেন। এই আনন্দ আর উপভোগ এর কাজ গুলো তে সফল হতে চেষ্টা চালিয়ে যাবেন, এক্সপেরিমেন্ট করতে হলেও করে যাবেন, ব্যার্থ হবার ভয় পাবেন না।
৪)অন্যরা যে রকম ঠিক তাকে সেরকম ভাবেই গ্রহণ করুন
অন্যদের বিচার করা বা জাজ করা কমিয়ে দিন, কারো সমালোচনা থেকে দূরে থাকুন।মানুষের দুর্বলতার চেয়ে পজিটিভ দিক গুলোর দিকে নজর দিন, তাদের স্ট্রেথ বা সবল দিক গুলোই ভাব্বেন।
নিজেকে উজার করে না দিয়ে একটু ডিফিকাল্ট বা কৌশলি অথবা কঠোর মানুষ গুলোর সাথেই কাজ করুন।
৫)আন্তরিকতার সাথে অন্যের কথা শুনুন
শুধু অন্যের কথা শোনার জন্যই শুনবেন না, মন দিয়ে শুনুন এবং বুঝুন, তাকে বুঝতে দিন আপনি তাদের কথা উপভোগ করছেন বা ফিল করছেন ( অবশ্যই পরিস্থিতি সেরকম হলে)
৬)জীবনের জটিল অসমাধান কৃত কাজ গুলো সমাধান করে মুক্তি দিন
নিজের সততা কে পুনর্জিবিত করুন। ধরে রাখুন সব সময়। কিন্তু মনের শান্তির জন্য যে বিষয় গুলো অনেক দিন ধরে সমাধান করা হয়নি, সেগুলোও সমাধান করে ফেলুন। ক্ষমা করে দিন সবাইকে, নিজেও ক্ষমা চেয়ে নিন সেরকম কিছু থাকলে। ক্ষমা চেয়ে নিষ্পত্তি করে ফেলুন এখুনি। এসব বিষয় নিয়ে নিজের মানসিক শক্তির অপচয় করবেন না।
৭)স্বাস্থ্যসম্মত জীবন ধারা মেনে চলুন
প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করুন। স্বাস্থ্যকর খারাব খান। আপনার শরীর কে ভালোবাসুন আগে মনের জন্য ও এটি জরুরি। অবশ্যই স্বাস্থ্যকর জীবন ধারা মেনে চলবেন কারন আপনি নিজেকে ভালোবাসেন আবেগ কে নয়। কাওকে আকর্ষন করার জন্য নয়, নিজেকে সন্মান করেন বলেই এটি করবেন।
৮)যে কোনো ঘটনাকে নিজেই সম্পন্ন করুন
কারো জন্য অপেক্ষা করবেন না। আপনি নিজেই উদ্যোগী হন। অসমাপ্ত কাজটিতে নিজেই হাত দিন। শেষ করে ফেলুন বাকি কাজ। আপনিই হোন প্রেরণাদায়ী ও অনুঘটক। আপনার উৎসাহ সকলে দেখুক।
৯)তাদের দেখান যে আপনি তাদের কেয়ার করছেন
শুধু মুখে নয়, কাজেও দেখান যে আপনি তাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। অন্যরা কেন আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ এটি তাদেরকে বুঝতে দিন।
১০)মানুষের সেরা দিক টাকে আপনি নজর দিন
অন্যরা যেমন আছে শুধু সে বিষয়টিতেই শুধুমাত্র আবদ্ধ থাকবেন না, তারা ‘কী হতে পারে’ সেটিতেও মনযোগ দিন। খুব বন্ধু ভাবাপন্ন ভাবে সৌহার্দ্যের সাথে এই দর্শনটি প্রয়োগ করুন।
১১) আপনার চাহিদা গুলো ফুলফিল হচ্ছে কিনা দেখুন
আপনার কি দরকার, আপনি কি চান সে বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখুন। দেখে নিন সম্পর্কের কোন বিষয়টি আপনার জন্য মূল্যাবান এবং গুরুত্বপূর্ণ , শুধুমাত্র শান্তির জন্য বা ধরে রাখার জন্য নিজের মনের শান্তি বা সত্যিকারের স্বপ্ন এর সাথে কম্প্রোমাইজ করবেন না।
১২)গঠনমূলক কথা বলুন। আপনার কথায় প্রেরণা, উন্নয়ন, উৎসাহ পাওয়া যায় এমন কথা বলুন। প্রেরণা দায়ক শব্দ ব্যবহার করুন। ‘গঠনমূলক সমালোচনাও’ করবেন না।
১৩)সহজেই হাসুন
নিজের মন কে ইজি রাখুন, সব কিছু হাল্কা ভাবে দেখুন। জীবনকে এত কঠিনভাবে নেবেন না। মজা করার চেষ্টা করুন এবং মজার বিষয় খুঁজুন। প্রচুর ফান করুন, হাসান , হাসুন মন খুলে।
১৪) গসিপিং বন্ধ করুন
পিছনে কথা বলা ছেড়ে দিন। এমন কোনো কথা বা তথ্য শেয়ার করবেন না আসলে যার কোনো ভ্যালুই নাই। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সব ধরনের গসিপিং থেকে নিজেকে দু্রে রাখুন।
১৫) অভিযোগ নয়, অনুরোধ করুন
কারও কাছ থেকে কিছুর দরকার হলে সরাসরি চান তার কাছে। অভিযোগ থাকলেও সেটি নিয়ে ঘ্যান ঘ্যান না করে সরাসরি অনুরোধের সাথে চেয়ে ফেলুন।
১৬)সরাসরি পরিস্থিতি ডিল করুন।
কোন কিছুতে অসন্তুষ্টির সৃষ্টি করলে সেটি সহ্য করবেন না। নেগেটিভ কোনো কিছুর সৃষ্টি হলে নরম ভাবে কিন্তু সুস্পষ্টভাবে না করে দিয়ে বিষয়টির নিষ্পত্তি করুন।
১৭) তর্ক এড়িয়ে চলুন। পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকলে , বা যখন দেখবেন কথা কাটাকাটির সম্ভাবনা, কথা বাড়াবেন না, হেসে এড়িয়ে চলুন। সম্পর্ক হেলদি থাকতে থাকতে এড়িয়ে যান।
১৮) কেও সাহায্য চাইলে সাহায্য করুন
সব সময় ভেবে বসবেন না যে কেও আপনার সাহায্য চায়, তাকে আপনি ভালো বুঝতে পারছেন। তাকে আপনাকে দরকার। এমনটি ভাবার কারন নেই। যার আপনার সাহায্য দরকার হবে সে আপনার কাছে সাহায্য চাইবে। সাহায্য চাইলেই তবে করবেন।
১৯) দূরত্ব বজায় রেখে আন্তরিক ভাবে খবর নিন
কারও সমস্যায় আপনি গভীরভাবে সমব্যাথি এটি তাদেরকে বুঝতে দিন, কিন্তু তার সমস্যায় নিজেকে ডুবিয়ে ফেলবেন না।
২০)চোখ দিয়ে নয়, অন্তর দিয়ে দেখুন
বাহ্যিক বিষয়কে নয় বরং ভেতরের মানুষটি দেখুন। পোশাক-পরিচ্ছদ, অর্থ প্রতিপত্তি এসব কিছুই নয়। আসল মানুষটিকে দেখুন।
২১) অন্তরে ‘না’ থাকলে বাইরে ‘হ্যাঁ’ বলবেন না
মনের ইচ্ছার বাহিরে কখনো হ্যা বলে বসবেন না। মনের বিরুদ্ধে হ্যাঁ বললে ভেতরে অসন্তোষ থেকেই যাবে। তখনই হ্যাঁ বলুন যখন আপনি সম্পূর্ণ রাজি।
২২)আপনি যে কৃতজ্ঞ সেটি অপরপক্ষকে বুঝতে দিন। অন্যকে বুঝতে দিন আপনি কার কাছে কতটুকু কৃতজ্ঞ , তাকে বুঝান যে তার কারণে আপনার জীবনে কতটুকু শান্তি এসেছে।
২৩) অন্যকে অপরাধী করবেন না বা ভাব্বেন না
এমন কিছু করার চেষ্টা করবেন না, যাতে অন্য ব্যক্তিটি নিজের পছন্দ, সিদ্ধান্ত বা কাজ নিয়ে অপরাধী বা ভুল করেছে মনে করে।
২৪) প্রত্যাশার চেয়ে বেশি দেবার চেষ্টা করুন
কখনও আশা দিবেন না, প্রতিশ্রুতি দিবেন না। তবে উদারভাবে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি দেবার চেষ্টা করবেন।
২৫) পারস্পরিকভাবে উন্নয়ন হয় এমন সম্পর্ক গড়ে তুলুন
কখনও নিয়ন্ত্রণ করবেন না, বা নির্ভরশীল হবেন না। এমন সম্পর্ক সৃষ্টি করুন, যাতে উভয়পক্ষই পারস্পরিকভাবে উপকৃত এবং উন্নীত হয়।

২৬)বড় হবার চেষ্টা করুন
অন্যকে ছোট করে নিজে কৃতীত্ব নেবেন না অথবা প্রশংসা করার সময় নিজেকে খাটো করবেন না। যখন স্বীকৃতি দেবার প্রয়োজন হয় এবং যখন সাহায্যের প্রয়োজন হয় তখনই দিন।
২৭) বিনয়ী হবার জন্য যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস অর্জন করুন
নিজের দুর্বলতা নিয়ে রসিকতা করার সামর্থ্য অর্জন করুন এবং ভুলত্রুটি স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকুন।
২৮)শেখার জন্য প্রস্তুত থাকুন
নিজের অতিরিক্ত বুদ্ধি এবং উচ্চতা দেখাতে যাবেন না । স্বীকার করুন এবং মেনে নিন যে সবখানেই শেখার বিষয় আছে, এমনকি জুনিয়রদের নিকট থেকেও শেখার আছে।
২৯) অন্যের সাথে সম্পৃক্ত হোন, তবে জড়িয়ে যাবেন না। অন্যের প্রতি আন্তরিক আগ্রহ প্রদর্শন করুন। ‘আমি’ বলার চেয়ে ‘আপনি/তুমি’ শব্দটি বেশি ব্যবহার করুন। মনযোগ দিয়ে শুনুন এবং প্রতিক্রিয়া দিন।
৩০)উপহার দিন চাহিদা মোতাবেক
শুধু ইমপ্রেস করার জন্য অথবা আপনার কাছে যা গুরুত্বপূর্ণ সেটি উপহার দেবেন না, অন্যের কি চাহিদা, সেদিকে নজর দিন, তার চাওয়ার বিষয়ে মনযোগ দিয়েই তবে তাকে সেরকম কিছু দিন।.
৩১)নিজেকে সবসময় চ্যালেন্জে রাখুন
গড়পড়তা মানুষ হিসেবে আটকে থাকবেন না অথবা অতীতের সফলতায় সন্তুষ্ট থাকবেন না। নতুন নতুন সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে যান এবং নিজের উৎসাহকে কাজে লাগিয়ে নিত্য নতুন এক্সপেরিমেন্ট করুন।
৩২)মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকুন
জীবনকে এমন ভাবে সহজ রাখুন, যেখানে চাপ, হইহুল্লা বা মনযোগ নষ্ট হবার মতো কিছু থাকবে না। চিন্তা এবং মনযোগ দেবার মতো পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ দিন।
৩৩)বর্তমান মুহূর্তের অপরিসীম ক্ষমতাকে কাজ লাগান
এখন যে মুহুর্তে আছেন সেই মুহূর্তটির চেয়ে মূল্যবান আর কোন কিছুই নেই। এই সময়টিকে আপনার শ্রেষ্ট সময় করে নিন। এর ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যান। ৩৪
৩৪)হারানো বিষয় ফিরে পাবার চেষ্টা করবেন না
আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরের কোন ব্যক্তি বা পরিস্থিতি নিয়ে আবার ফিরে পাবার বা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করবেন না। উপযুক্ত সময় ও সুযোগের অপেক্ষা করুন।
বিবর্তিত হোন, বিকশিত হোন আত্ম-উন্নয়নের পথে চলুন এবং অপেক্ষাকৃত ভালো সুযোগের অপেক্ষায় থাকুন।
ধরে নিন এবং মেনেই নিন যে আপ্পনি সবার কাছে গ্রহনযোগ্য হবেন না। হলে তো বেশ ভালো। নিজের ব্যাক্তিগত উন্নয়ন হলে এবং আকর্ষণ বাড়লে, কিছু মানুষ আপনার দিকে মুখ ফেরাবে, আপ্নাকেই চাইবে শুধু। সেই কিছু মানুষগুলোই আপনার জন্য অভাবনীয় সফলতা এনে দেব
অনেক উপকারী একটি লেখা।
আমি আপনার লেখা থেকে অনেক কিছুই নোট করে নিয়েছি।
ভবিষ্যতে আপনি আপনার লেখা চালিয়ে যাবেন এই কামনা করছি।
এমন একটি উপকারী লেখা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ!